আব্দুর রহমান, নেত্রকোনা ,
মঙ্গলবার সকাল ১১ টার দিকে নেত্রকোনা জেলা শহরের সাতপাই প্রফেসর পাড়ায় অবস্থিত জামালুল কুরআন ইন্টারন্যাশনাল হাফেজিয়া মাদরাসার চার তলা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে শিশু নাইফ (১০) নামক এক ছাত্রের করুণ মৃত্যু হয়েছে। শিশু নাইফ নেত্রকোনা এন আকন্দ আলিয়া মাদরাসার শিক্ষক মুহাদ্দিস মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ্র পুত্র। মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক অভিভাবকগন এ মৃত্যুর জন্য মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ও ভবন মালিকের গাফেলতিকে দায়ী করে থানা ঘেরাও করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চলমান করোনা সঙ্কটকালীন সময়ে মাদরাসাসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও জামালুল কুরআন ইন্টারন্যাশনাল হাফেজিয়া মাদরাসা কর্তৃপক্ষ গোপনে মাদরাসাটি খোলা রাখে। মঙ্গলবার দুর্ঘটনাকালীন সময়ে নিহত নাইফসহ ১০ জন ছাত্র ও তিন জন শিক্ষক মাদরাসায় অবস্থান করছিল। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ চারতলা ভবন ভাড়া নিয়ে সেখানে বানিজ্যিক ভাবে মাদরাসা পরিচালনা করে আসছিল। ভবনের ছাদে উপরে কোন রেলিং ছিল না। কোন বাঁধা নিষেধ না থাকায় ছাত্ররা অবাধে সেখানে যাতায়াত ও ইচ্ছামত খেলাধূলা করতো। মঙ্গলবার সকাল ১০টা সাড়ে ১০ টার সময় নাইফসহ কয়েকজন ছাত্র চারতলা রেলিং বিহীন খোলা ছাদে খেলাধূলা করতে থাকে।
বেলা ১১টার সময় ঠেলাধাক্কায় নাইফ আকস্কিভাবে ছাদ থেকে পড়ে মাথা থেতলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ সময় ছাদের উপরে অবস্থানরত ছাত্রদের ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে পৌঁছে নাইফের অসার দেহ উদ্ধার করে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতলে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় ছাত্র-শিক্ষক ও অভিভাবকদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে তারা থানা ঘেরাও করে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ও ভবন মালিকের উদাসীনতাকে দায়ী করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোর্শেদা খাতুন ন্যায় বিচারের আশ্বাস প্রদান করলে তারা শান্ত হন। জামালুল কুরআন ইন্টারন্যাশনাল হাফেজিয়া মাদরাসার মুহ্তামিম মাওঃ আব্দুল হালিম সালমানের মোবাইলে একাধিকবার কল দেয়ার পরেও রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নেত্রকোনা সদর সার্কেল) মোর্শেদা খাতুন বলেন, শিশু নাইফের লাশ ময়না তদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট হাতে আসার পর এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।