আব্দুর রহমান, নেত্রকোনা প্রতিনিধি :
মাদকাসক্ত যুব সমাজকে সুস্থ স্বাভাবিক জীবন ধারায় ফিরিয়ে এনে পূণবার্সনের মহতি উদ্যোগের পাশাপাশি এবার বয়স্ক নাগরিকদের নির্মল চিত্ত বিনোদনের জন্য ‘বয়স্ক বিনোদন কেন্দ্র’ চালু করেছেন ‘তরী’ মানসিক ও মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের পরিচালক কামাল হোসেন খান। কামাল হোসেন খান এই প্রতিবেদককে জানান, মাদকাসক্ত যুব সমাজকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা এবং মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে আধুনিক চিকিৎসার মাধ্যমে তাদেরকে সুস্থ স্বাভাবিক জীবন ধারায় ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে ২০১০ সালে আমি নেত্রকোনায় প্রথম ‘তরী’ নামক একটি মানসিক ও মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র চালু করি। সেখান থেকে সু-চিকিৎসা নিয়ে প্রায় ৯০ ভাগ যুবক সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন ধারায় ফিরে গেছে। আমার ভবিষ্যত পরিকল্পনা হচ্ছে, এলাকায় একটি বৃদ্ধাশ্রম প্রতিষ্ঠা করা।
যেখানে সন্তানদের কাছ থেকে বিতাড়িত ও অবহেলিত হয়ে যে সকল বাবা মা মানবেতর জীবন যাপন করছেন, তাদেরকে বৃদ্ধাশ্রমে এনে বিনামূল্যে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। তিনি আরো বলেন, মহামারী করোনার কারণে সারা বিশ্ব যখন স্থবির, সাধারণ মানুষ যখন ভয়ে আতংকে আতংকিত, ভীত সন্ত্রস্থ, ঠিক সেই সময় মানবিক কারণে এলাকার বয়স্ক মানুষদেরকে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে নির্মল চিত্ত বিনোদনের জন্য আমি আমার গ্রামের বাড়ী নেত্রকোনা সদর উপজেলার লক্ষীগঞ্জ বাজারে চালু করেছি ‘বয়স্ক বিনোদন কেন্দ্র’।
সেখানে বয়স্ক লোকজন যাতে সুন্দর পরিবেশে বসে দেশ বিদেশের খবরাখবর দেখতে ও জানতে পারে তার জন্য টেলিভিশনের (এলইডি) ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি সম-সাময়িক ঘটনাবলীর বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও সাধারণ জ্ঞান আহরনের জন্য নানা ধরনের বই রাখা হয়েছে। ষাটোর্ধ শাহজাহান কবীর বলেন, বয়স্ক মানুষের বিনোদনের জন্য কামাল হোসেন খান যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা মহতি উদ্যোগ। আমি এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। মধ্য বয়স্ক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সারাদিন ক্ষেতে খামারে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে সন্ধ্যায় বিনোদন কেন্দ্রে এসে কিছুটা সময় বিনোদন উপভোগ করতে পারি। সাইদুল ইসলাম বলেন, এখানে পত্রিকা রাখায় অবসর সময়ে পত্রিকা পড়ে সময় কাটাতে পারি। এর পরিধি বৃদ্ধি করলে আরো বেশী সংখ্যক লোক উপকৃত হবে। খোকন মিয়া বলেন, এলাকার পরিবেশ নষ্ট হয়ে গেছে। ছেংরা পোলাপানের জন্য কোথাও বসে শান্তি পাই না। এখানে সুন্দর পরিবেশে বসে টিভি দেখে শান্তি পাই।