আবদুল কাদির, গৌরীপুর :
ঈদকে সামনে রেখে টুং-টাং শব্দে মুখর হয়ে উঠেছে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার কামারপল্লী। দিন রাত ব্যস্ত সময় পার করছেন কামাররা। কুরবানির ঈদ ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে বাড়ছে তাদের কাজের ব্যস্ততা। তবে বিশ্ব জুড়ে মহামারি করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে থমকে আছে দেশ। তারপরও প্রতিবারের তুলনায় এ বছর কামারপল্লীতে কাজের চাপ অনেকটা কম দেখা গেছে।
নতুন চাপাতি, ছুরি তৈরির পাশাপাশি চলছে পুরনো অস্ত্রে শান দেওয়ার কাজ। গৌরীপুর উপজেলার গৌরীপুর পৌর বাজার,শ্যামগঞ্জ বাজার,গোবিন্দপুর বাজার, রামগোপালপুর বাজার, ডৌহাখলা বাজার, ভূটিয়ারকোনা বাজার,পাছার বাজারসহ ছোট-বড় সব হাটে কামাররা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। ভোর থেকে শুরু করে কাজ চলছে গভীর রাত পর্যন্ত মাখন বাড়ই বলেন, ‘ঈদের আগে কাজে চাহিদা বেড়ে গেছে। তবে প্রতিবারের চেয়ে এবছর করোনার কারণে কাজের চাপ অনেক কম।
এজন্য বর্তমানে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করছি। আগে খুব সকালে দোকানে আসতাম আর বাড়ি যেতাম গভীর রাতে। এখন তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করে বাসায় চলে যাই। গড়ে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০টি কাজ করে হাজার দেড়েক টাকা আয় হচ্ছে ২-৩ দিন ধরে। আগে এর চেয়ে বেশি আয় হতো।
তিনি আরও বলেন, একটি বড় দা বটি পাচ কেজির লোহা দিয়ে তৈরি করে মজুরিসহ ৮০০ টাকা, এক কেজি ওজনের কুড়াল ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, চাপাতি প্রকার ভেদে ৪৫০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা, বিভিন্ন আকারের ছোরা ৩৫০ টাকা থেকে ৬৫০ টাকা করে নিচ্ছেন তারা। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, অন্য সময়ের চেয়ে এখন চাপাতি, চাকু, ছুরির দাম বেশি রাখা হচ্ছে।সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কামারপট্টির কামারদের এখন কাজের চাপ কিছুটা বেশি। একের পর এক ক্রেতা এসে দোকানে ভিড় করছেন।
আগের চেয়ে বর্তমানে একটু কম চাপ থাকলেও দোকান ছেড়ে যাওয়ারও কোন উপায় নেই। তাই সকাল, দুপুরের খাবার তারা দোকানে বসেই সেরে নিচ্ছেন। পুরনো দুইটি দা, একটি বটি ও একটি ছুরিতে শান দেয়ার জন্য ৩৫০ টাকা নিচ্ছেন। অন্য সময় মজুরি ছিল ১৫০ টাকা। আর নতুন একটি ছোরা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, বিভিন্ন সাইজের চাকু ৫০ থেকে ১০০ টাকা, বটি ২০০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি করছেন তিনি আরও বলেন, ‘আগে অন্য হাট-বাজারে প্রতিদিন বিভিন্ন লৌহজাত জিনিস বানিয়ে ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা রোজগার হতো। তবে ঈদের আগে লোহার অস্ত্রের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এখন প্রতিদিন ১ হাজার টাকা থেকে ১২০০ টাকা আয় হচ্ছে। ঈদের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করতে এবছর সময় কম লাগছে। এবছর আমি নতুন কাজের অর্ডার নেয়া বন্ধ করিনি। গতবছর এসময় অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলাম। এবছর তার উল্টো।