ময়মনসিংহ ২৪.০৯°সে ৬ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

করোনা মোকাবেলায় মানবিক সেবা দিয়ে ময়মনসিংহ পুলিশ প্রশংসিত


স্টাফ রিপোর্টার,

করোনা মহামারীর সময়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অসহায় ও দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ। আক্রান্তদের হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা, লকডাউন ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণ, নিজস্ব অর্থায়নে অসহায়, অস্বচ্ছল, দিন এনে দিন খাওয়া ও ভাসমানদের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ, ন্যায্যমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রিসহ নানা ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে এ বাহিনীর সদস্যরা। এ কর্মকাণ্ড সরাসরি মনিটরিং করছেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আহমার উজ্জামান। এ জন্য তিনি জেলার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটে বেড়াচ্ছেন। করোনার এই দুর্যোগময় মুহুর্তে পুলিশের মানবিক এ কর্মকাণ্ড জেলার সর্বত্র প্রশংসিত হয়েছে।

জানা যায়, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর থেকেই জেলা পুলিশের সদস্যরা ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে জনসাধারণের আস্থা অর্জন করতে সম হয়েছেন। নিজেদের বেতনের টাকা, বৈশাখী ভাতা এবং পুলিশের আভ্যন্তরীণ কেনাকাটায় অর্থ বাচিয়ে জেলার কর্মহীন অসহায় হতদরিদ্র প্রায় ছয় হাজার পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছে ময়মনসিংহ পুলিশ। বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি নিজস্ব অর্থায়নে ন্যায্যমূল্যে পণ্য সরবরাহ করছেন পুলিশ সদস্যরা। জনসচেতনতা সৃষ্টিতে পুলিশের নিজস্ব শিল্পীদের মাধ্যমে করে বাসিন্দাদের সচেতন করা হয়। ধান কাটার জন্য শ্রমিক প্রেরণ, বিভিন্নস্থানে আটকে পড়া শ্রমিকদের মানবিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

এছাড়া পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামানের নির্দেশে জেলা পুলিশ বস্তিবাসী, অসহায়, অস্বচ্ছল, দিন এনে দিন খাওয়া, কর্মহীন, শ্রমিক, বেদে পরিবার, নাপিত, কুলি, নৌকা মাঝি, এতিমদের খুঁজে খুঁজে তালিকা করে তাদের ঘরে ঘরে খাদ্য সহায়তা করে ময়মনসিংহ পুলিশ মানবিক হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছেন। এছাড়াও লকডাউনে বিভাগীয় নগরীতে না খেয়ে ফুটপাতে পড়ে থাকা ভাসমানদের আহার যুগিয়েছেন পুলিশ সুপার। রান্না করা খাবারের প্যাকেট নিয়ে শহরে ঘুরে ঘুরে ভাসমান না খাওয়া মানুষের পেটে নিয়মিত আহার তুলে দেয়া হয়।
এসপি আহমার উজ্জামানের মানবাধিকতার খবর জেলার সকলস্তরে ব্যাপকভাবে চাউর হলে এসপির ফেইসবুকে আবেদন করে পঙ্গু, স্বামীহারা পরিবার। তাৎণিক ওসি ডিবি শাহ কামাল আকন্দের মাধ্যমে অসহায় পরিবারদের খুঁজে খুঁজে খাবার পৌছে দেন। একই সাথে এতিমদের বাড়ি বাড়ি খাদ্য পৌঁছে দিয়ে রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন মানবিক এসপি।

এছাড়া করোনায় যারা মারা যাচ্ছেন তাদের দাফনের দায়িত্ব পড়েছে পুলিশের ওপর। করোনা প্রতিরোধে নানা ধরনের কর্মসূচি বাস্তবায়নের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো রাখতে দায়িত্বশীল হওয়ায় জেলা পুলিশ স্থানীয়দের কাছে প্রকৃত সেবকে পরিণত হয়েছে। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আহমার উজ্জামানের মানবিক ও দায়িত্বশীল কর্মকান্ড এখন জেলাবাসির মুখে মুখে। করোনার চরম ঝুঁকি নিয়ে তিনি প্রতিদিনই ছুটছেন জেলার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। জেলা পুলিশের সব ইউনিটকে সদা জাগ্রত রাখছেন মানব সেবায়। জানতে চাইলে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আহমার উজ্জামান বলেন, প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আইজিপি মহোদয়ের মানবিক নির্দেশনা মেনে আমরা সর্বদা জনসাধারণের পাশে রয়েছি। এই দুর্যোগময় মুহুর্তে দায়িত্ববোধই আমাকে নিরবে বসে থাকতে দেয়নি।
মানবিক মূল্যবোধ, দেশপ্রেম, মানব প্রেম সার্বণিকভাবে আমাকে তাড়া করেছে। তাই আমি অবিরাম ছুটে চলছি মানব সেবার আগ্রহ নিয়ে। তিনি বলেন, করোনায় সেবা দিতে গিয়ে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আক্রান্ত হলেও আমরা থেমে নেই। জীবনের শেষ রক্ত বিন্দু থাকা পর্যন্ত দেশ ও জাতির সেবায় নিজেদের বিলিয়ে দেব।

আপনার মতামত লিখুন :

 
   
২০২০ - ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত